আইবিএন রিপোর্ট: ৫ আগস্ট, মঙ্গলবার, সন্ধ্যা সাড়ে ৯টায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, আওয়ামী পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টকে ‘গণতন্ত্র, ছাত্র-জনতা-পুলিশ হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আবেগ ও তারুণ্যের প্রতিবাদী চেতনাকে অপব্যবহার করে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, জামায়াত-শিবির, মৌলবাদী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে হত্যা, হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও ভোটাধিকারকে ধ্বংস করেছে। এই ঘটনাকে তারা বাংলাদেশকে ‘গণতন্ত্রের গোরস্থান’ ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কলামিস্ট ড. প্রদীপ রক্ষিত। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান সরদার। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন এবং উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন।
বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দীন দেওয়ান, আবুল হাসিব মামুন, দফতর সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার আলী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও কলামিস্ট এম এ করিম জাহাঙ্গীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি, খুরশিদ আনোয়ার বাবলু, ফারুক হোসাইন, আবুল কাশেম সরদার, শেখ হাসিনা মন্ত্রের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দীন জলিল, সাধারণ সম্পাদক কায়কোবাদ খান, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া অনু, কাজল মাহমুদ, সাখাওয়াৎ হোসেন, মোহাম্মদ আলী গজনবী, অ্যাডভোকেট মোর্শেদা জামান, জেসমিন আক্তার কহিনুর, শেখ আতিকুল ইসলাম, শাহীন আজমল, দেলওয়ার হোসেন মোল্লা, একে চৌধুরী, মোজাহিদ আনসারী, কবি ফজলুল কাদের, শিল্পী গুন, বদিউজ্জামান দুলাল, ওয়াব জুয়ারদার, শেখ ফারুক, সাংবাদিক আহসান হাবিব, মোহাম্মদ আইয়ুব, মোহাম্মদ সুমন, প্রকৌশলী জাহিদ, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জেড এ জয়, সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম, যুবলীগ আহ্বায়ক শেখ জামাল হোসেন, এবং খন্দকার জাহেদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবু বকর সাদেক তুষার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি গোষ্ঠী জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ড, হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, যা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে গেছে। তারা অভিযোগ করেন, ইনডেমনিটির মাধ্যমে ড. ইউনূস তার বাহিনীকে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, যা দেশকে জঙ্গলের শাসনে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্যবোধকে ধারণ করে তারা এই অত্যাচার ও পশ্চাৎপদতার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন এবং তারুণ্যের নেতৃত্বে সকল অপশক্তিকে উৎখাত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
সমাবেশের শুরুতে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২, ১৯৬৪, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ড, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ড, এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ও ২০২৫ সালের ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনগুলো তারুণ্যের শক্তি ও নিঃশ্বাস ধারণ করে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন ও মানুষের মর্যাদা ফিরিয়ে আনবে। তারা সকল শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁদের সাহস ও আত্মত্যাগকে শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।