আইবিএন রিপোর্ট : নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক প্রাইমারি নির্বাচনে জয়ী মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানিকে “জীবন” জ্যামাইকা ইন্টিগ্রেটেড বাংলাদেশি অফিসার্স নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে এনডোর্সমেন্ট প্রদান করা হয়েছে। গত শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫, দুপুর ২টায় নিউইয়র্কের কুইন্সের সিরাজী ব্যাঙ্কুয়েট হলে এই এনডোর্সমেন্ট অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানটি “জীবন” এর সাধারণ সম্পাদক ডিটেকটিভ রাসেক মালিকের উপস্থাপনা ও পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। “জীবন” এর সভাপতি ক্যাপ্টেন কারাম চৌধুরী সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি পুলিশ অফিসার মোঃ হালিম এবং “জীবন” এর ফাউন্ডার নির্বাহী বোর্ডের সদস্য, পুলিশ অফিসার ও সাংবাদিক সর্দার আল মামুন।
জোহরান মামদানি তার বক্তব্যে “জীবন” এর সমর্থনের জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “এই সমর্থন আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিউইয়র্ক সিটিকে সকলের জন্য বাসযোগ্য ও ন্যায্য করে তুলতে কাজ করব।”
অনুষ্ঠানে “জীবন” এর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এনডোর্সমেন্টের পর দুপুরের ভোজের মাধ্যমে সবাইকে আপ্যায়ন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ইমাম ছামশি আলী প্রার্থনা পরিচালনা করেন।
৩৩ বছর বয়সী জোহরান মামদানি তার দরিদ্রকেন্দ্রিক ও পুঁজিবাদ-বিরোধী নীতির কারণে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি ধনীদের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ এবং কম আয়ের মানুষদের জন্য সরকারি আবাসন সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার এই নীতিমালা ফরচ্যুন, সিএনবিসি, ফক্স বিজনেস, নিউইয়র্ক টাইমস, এবং নিউইয়র্ক পোস্টের মতো গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
তার ঘোষণা অনুযায়ী, এক মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করা বাসিন্দাদের উপর ২ শতাংশ বাড়তি কর আরোপ করা হবে, যা নিউইয়র্কের বিলাসবহুল আবাসন ব্যবসায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধনী ব্যবসায়ীরা জোহরানের নীতির কারণে নিউইয়র্ক ছেড়ে ফ্লোরিডার মতো রাজ্যে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। আবাসন ব্যবসায়ী জে বাতরা জানিয়েছেন, তার ক্রেতারা বহু কোটি ডলারের সম্পত্তি কেনার পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করছেন।
ফক্স নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জোহরানের মনোনয়নের পর ফ্লোরিডার আবাসন ব্যবসায়ীদের ওয়েবসাইটে নিউইয়র্ক থেকে ভিজিট ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিকে “ট্যাক্সোডাস” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
জোহরানের নীতিমালা নিয়ে তাকে “কমিউনিস্ট” আখ্যা দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে “শতভাগ কমিউনিস্ট পাগল” বলে সমালোচনা করেছেন। তবে, জোহরান এনবিসি’র এক আলোচনায় স্পষ্ট করে বলেছেন, “আমি কমিউনিস্ট নই।”
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আনা জিমালা-বুসে এবং সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের অধ্যাপক জিওফ্রে কার্টজও জোহরানকে কমিউনিস্ট আখ্যা দেওয়াকে “হাস্যকর” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলেন, জোহরানের নীতি কমিউনিজমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, বরং তিনি জনকল্যাণমূলক নীতির উপর জোর দিচ্ছেন।
জোহরান মামদানির প্রার্থিতা নিউইয়র্ক সিটির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন গতি এনেছে। তার সমর্থকরা মনে করেন, তার নীতি শহরের কম আয়ের মানুষদের জীবনমান উন্নত করবে। অন্যদিকে, সমালোচকরা আশঙ্কা করছেন, তার কঠোর করনীতি নিন্মস্থায়ী অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে।
আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে জোহরান মামদানির সম্ভাব্য জয় নিউইয়র্ক সিটির ভবিষ্যৎ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জীবন এর প্রেসিডেন্ট কারাম চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট এম ডি এ হালিম, সেক্রেটারি রাসেক মালিক, কোষাধ্যক্ষ পঙ্কজ রয়, সহকারী কোষাধ্যক্ষ অনিক ইসলাম, মিডিয়া লিয়াজন পাপিয়া শারমিন, ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর হাসান আহমেদ পলাশ, ফাউন্ডার মেম্বার মেহেদী মামুন, মামুন সর্দার, রাজিব ঘোষ, এ্যাডভাইজর সাজেদুর রহমান, ডক্টর সুজাত খান, এম ডি আলী, মনজুর রহমান, রিয়েল স্টেট ইনভেস্টর আরিফ হোসেন, এম ডি এ মাসুম, এজাজ হোসেন, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডাঃ ওয়াজেদ এ খান , বাপসনিউজ এডিটর ও আইবিএন নিউজ প্রধান সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, এম ডি হক, এম ডি রহমান, অভিনেত্রী রিচি সোলাইমান, ডাক্তার ইসলাম, এম ডি হাসান, জে এম সির পরিচালক ইমাম সামসের আলী, প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান,কমিউনিটি লিডার ফখরুল ইসলাম দেলওয়ার এবং কমিউনিটি এক্টিভিস্ট ফাহাদ সোলাইমান প্রমুখ ।