নিউইয়র্কে কক্ষপথ ৭১-এর প্রতিবাদ সমাবেশ আনুষ্ঠিত 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনায় উজ্জীবিত প্রবাসী আইনজীবীদের এই সংগঠন "কক্ষপথ ৭১"-এর মূল দাবি ছিল: একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা সুরক্ষা, ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শোষণমুক্ত সমাজ গঠন, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষা।

IBN-News-Logo-Blue
By
IBN News
WE Are love for news
ছবি: নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ "কক্ষপথ ৭১" আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত অতিথিবৃন্দ।

আইবিএন রিপোর্ট: প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ১৯৭২ সালের সংবিধান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং আদালত ও আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষার দাবিতে নিউইয়র্কে “কক্ষপথ ৭১” নামক সংগঠনের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশটি গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিউইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে আয়োজিত হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনায় উজ্জীবিত প্রবাসী আইনজীবীদের এই সংগঠন “কক্ষপথ ৭১”-এর মূল দাবি ছিল: একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা সুরক্ষা, ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা, শোষণমুক্ত সমাজ গঠন, আইনের শাসন ও মানবাধিকার রক্ষা। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শেখ আখতার উল ইসলাম এবং পরিচালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মিয়া জাকির।

সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন অ্যাডভোকেট কাজী আশিক উদ্দিন খান, পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন অ্যাডভোকেট শ্রী জয়জিত আচার্য, পবিত্র বাইবেল থেকে পাঠ করেন পাস্টর জেনস খ্রিস্টোফার এবং পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ করেন সুকৃতি বড়ুয়া। সভায় সংগঠনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মিয়া জাকির।

প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ রঞ্জন কর, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বাপসনিউজের এডিটর হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল খান আনসারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসেন, সাংস্কৃতিক সংগঠক লুৎফুন নাহার লতা, নূর ফাতেমা, প্রগ্রেসিভ ফোরামের নেতা জাকির হোসেন বাচ্চু, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, সাংস্কৃতিক সংগঠক মিতুন আহমেদ, ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক প্রেস মিনিস্টার সাজ্জাদ হোসেন সবুজ, সাংস্কৃতিক সংগঠক মিনহাজ আহমেদ সামু, মোজাহিদ আনসারী, আলী আহসান কিবরিয়া অনু, অ্যাডভোকেট নূর ফাতেমা, অ্যাডভোকেট আব্দুল সত্তার, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবুল, অ্যাডভোকেট মোর্শেদা জামান, অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াহিদ, অ্যাডভোকেট শ্রী জয়জিত আচার্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সাঈদ, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, জয়তুর্য চৌধুরী, ঝর্না চৌধুরী প্রমুখ।

ছবি: বক্তব্য রাখছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ রঞ্জন কর।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট সাইয়েদ মঈন উদ্দিন জুনেল, খলিলুর রহমান মনির হোসেন, ফারুক হোসেন, মিজান আহমেদ, সাব্বির হোসেন বাপ্পি, খ্রিস্টোফার অধিকারী, পলি অধিকারী, শহিদুল ইসলাম, আব্দুল সাদেক, রেশমা ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট রুবিনা মান্নান, অ্যাডভোকেট সোনিয়া সুলতানা, নূর কানিজ ফাতেমা, অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান, মোশাররফ হোসেন, ড. সেলিনা আফরীন রীতা, হানিফ মৃধা, অ্যাডভোকেট এম. এম. জাহিদ আনোয়ার, এম এ কাশেম, রীনা আবেদীন, সৈয়দ এস আলী, সংগীতশিল্পী আল আমিন বাবু, মোজাফর আহমেদ, ইয়াসমিন রাশিদ, নিজাম আহমেদ, শেফালী রওশন, উর্বি সাবিনা, ফাতেহ লোহনী, কাজল মাহমুদ, গীতালী হাওয়ালদার, জালাল উদ্দিন, হাসান আহমেদ, অ্যাডভোকেট রেদোয়ানা রাজ্জাক সেতু, সৈয়দ মোজাম্মেল আলী, নজরুল ইসলাম, কুবরাতুন নেছা সহ আরও অনেকে।

ছবি: বক্তব্য রাখছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বাপসনিউজের এডিটর হাকিকুল ইসলাম খোকন।

সমাপনী বক্তব্যে সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শেখ আখতার উল ইসলাম ১৯৭২ সালের সংবিধান নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন এবং সকলের কাছে সংবিধানের কপি প্রদর্শন করেন। যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মিয়া জাকির মূল প্রবন্ধে বলেন, “কক্ষপথ ৭১: চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ।” তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে বর্তমানে অনির্বাচিত সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঘাত করছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকে অবমাননা করছে এবং দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ প্রতিরোধের আহ্বান জানান।

ছবি: আমন্ত্রিত অতিথিদের একাংশ।

সংগঠনের মূল দাবি ও প্রস্তাবিত কার্যক্রম

সভায় সংগঠনের পক্ষ থেকে নিম্নলিখিত দাবি ও কার্যক্রমের রূপরেখা তুলে ধরা হয়:

মূলনীতি ও দর্শন:

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ১৯৭২ সালের সংবিধানকে রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি করা; জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।

ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তা প্রতিহত করা।

প্রস্তাবিত কার্যক্রম:

গণশিক্ষা: অভিন্ন, মানবিক ও বৈজ্ঞানিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু; প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা।

গণস্বাস্থ্য: সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা; সরকারি হাসপাতালের উন্নয়ন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।

গণপরিবহন: সাশ্রয়ী ও নিরাপদ গণপরিবহন; সড়ক নিরাপত্তা আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন।

গণপ্রশাসন: প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিশ্চিত; দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ।

পরিশেষে বলা হয়, এই নীতিমালা জাতীয় ঐক্য ও উন্নয়নের ভিত্তি হবে। সভার শেষে সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শেখ আখতার উল ইসলাম সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

Share This Article
Follow:
WE Are love for news
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version