আইবিএন রিপোর্ট : গত রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫, নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে ‘বাংলাদেশ হিউমান রাইটস ওয়াচ ইউএসএ’ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের চলমান সহিংসতা, মব ভায়োলেন্স, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান, গোপালগঞ্জের গণহত্যায় সামরিক বাহিনীর ভূমিকা এবং তথাকথিত ‘দখলদার অবৈধ ইউনুস সরকারের’ অপকর্মের দলিল সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের মহাসচিব প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকী, এবং মূল বক্তব্য পাঠ করেন উপদেষ্টা শামীম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ড. মহসিন আলী, উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন্নবী, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শীতাংশু গুহ, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আবু বক্কার সিদ্দিক, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হুসাইন, এডভোকেট শাহ মো বখতিয়ার, জালাল উদ্দিন জলিল, রুমানা আখতার, কায়কোবাদ খান, নুরুজ্জামান সরদার, খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, টি মোল্লা, এবং হৃদয় মিয়া।
সম্মেলনে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। কুপিয়ে ও পিটিয়ে সাংবাদিক হত্যা, শাহরিয়ার কবির, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, শাকিল আহমেদ, ফরজানা রূপা, এবং প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলায় জামিন অযোগ্য ধারায় আটকের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। এছাড়া, ১৬৭ জন সাংবাদিকের এক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল, হাজারের বেশি সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি, এবং গণমাধ্যম দখলের ঘটনা উল্লেখ করা হয়।
নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে দেশত্যাগে বাধ্য করা, শত শত মিথ্যা হত্যা মামলায় আসামি করা, এবং ‘জামাতি বিচারপতি’ দিয়ে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে’ বিচারের নামে প্রহসনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। দেড় লাখের বেশি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, সাবেক প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, এবং উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ও গ্রেফতারের ঘটনারও সমালোচনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। দেশে ভয়ের সংস্কৃতি, নিরাপত্তাহীনতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম, লাখ লাখ শ্রমিকের বেকারত্ব, বিদেশী বিনিয়োগের অভাব, রেমিটেন্স হ্রাস, রিজার্ভের সংকট, ৩.৩% জিডিপি প্রবৃদ্ধি, এবং দ্বিঅঙ্কের মূল্যস্ফীতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
শামীম চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, “৩০ লাখ শহীদের রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশ আজ দেশী-বিদেশী শকুনের থাবায় ক্ষতবিক্ষত। বিগত ১৫ বছরের গণতান্ত্রিক সরকার পশ্চিমা পরাশক্তির ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে।” তিনি USAID এবং জর্জ সরোসের মাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের গ্রামীণ ফাউন্ডেশনে ২১২ মিলিয়ন ডলার প্রদানের অভিযোগ তুলে বলেন, এই অর্থ ব্যবহার করে দেশপ্রেমিক সরকার প্রধান শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ইউনুসকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশকে রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘দখলদার ইউনুস সরকার’ অপসারণের জন্য দেশে-বিদেশে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা পুনর্নির্মাণে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।