পেনসিলভানিয়ায় ভোট জালিয়াতির ঘটনায় দুই বাংলাদেশির কারাদণ্ড 

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ডেভিড মেটকাফ বলেন, এই আসামিরা তাদের নিজ সম্প্রদায়ের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। আমরা নির্বাচনকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

IBN-News-Logo-Blue
By
IBN News
WE Are love for news
ছবিতে দন্ড প্রাপ্ত নুরুল হাসান ও রফিকুল ইসলাম

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের মিলবোর্নের বরো শহরের ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির ঘটনায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিককে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির ফেডারেল আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নুরুল হাসান (৪৮) ও রফিকুল ইসলাম (৫২)।

স্থানীয় সময় ১৮ জুন এই রায় পেনসিলভানিয়ার ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ইউএস অ্যাটর্নি অফিস থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে নিশ্চিত করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ফেডারেল আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের নথি অনুযায়ী, মেয়র পদপ্রার্থী নুরুল হাসান ও তার সহযোগী রফিকুল ইসলাম একটি সুপরিকল্পিত ভোট জালিয়াতির ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। তারা মিলবোর্ন শহরের বাইরে বসবাসকারী পরিচিতজনদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে ভুয়া ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করেন এবং তাদের নামে মেইল-ইন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট প্রদান করেন।

নুরুল হাসান নিজেই তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার ব্যবহার করে PAOVR (Pennsylvania Online Voter Registration) সাইটে গিয়ে ভোটারদের ঠিকানা পরিবর্তন করেন। কিছু ক্ষেত্রে ভোটারদের অজান্তেই তাদের তথ্য ব্যবহার করে ভোটার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হয়। অনেকের অনুমতিতে তাদের ই-মেইল ব্যবহার করেছেন তিনি। রফিকুল ইসলাম তার দুটি ই-মেইল অ্যাড্রেস নুরুল হাসানকে ব্যবহার করতে দেন এই উদ্দেশ্যে। তাদের অনুরোধে অনেকে ব্যক্তিগত তথ্যও দেন, আবার অনেকের তথ্য তারা জোগাড় করেন ব্যবসায়িক বা অন্যান্য উৎসে তাদের নামে ভোটার রেজিস্ট্রেশন হয়েছে।

তারা প্রায় তিন ডজন ভুয়া ভোটার তৈরি করেন এবং তাদের নামে ব্যালট পাঠিয়ে দেন। তবু নুরুল হাসান নির্বাচনে হেরে যান ২৭ ভোটের ব্যবধানে (১৬৫ বনাম ১৩৮ ভোট)।

ফেডারেল প্রসিকিউশন রায়ে নুরুল হাসানকে ৩৬ মাসের এবং রফিকুল ইসলামকে ১২ মাস ১ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রের প্রতি সরাসরি আঘাত এবং জনগণের আস্থা ভেঙে ফেলে। এফবিআই এবং ডেলাওয়্যার কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নির অফিস এই মামলার তদন্ত পরিচালনা করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ডেভিড মেটকাফ বলেন, এই আসামিরা তাদের নিজ সম্প্রদায়ের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। আমরা নির্বাচনকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এফবিআইর ফিলাডেলফিয়া ইউনিটের প্রধান ওয়েইন জ্যাকবস বলেন, ভোটার প্রতারণা শুধু আইন ভঙ্গ নয়, এটি গণতন্ত্রের ভিত্তিকে নষ্ট করে।

ডেলাওয়্যার কাউন্টির জেলা অ্যাটর্নি জ্যাক স্টলস্টেইমার বলেন, এই মামলায় আমাদের অংশীদারিত্ব প্রমাণ করে, আমরা মুক্ত ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

এদিকে এই রায় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ এটিকে গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, যা পুরো কমিউনিটিকে প্রতিনিধিত্ব করে না।

Share This Article
Follow:
WE Are love for news
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version